রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৯:৫৮ পূর্বাহ্ন
মিহিরুজ্জামান, সাতক্ষীরা, কালের খবর :
পবিত্র ঈদুল আজহাকে কেন্দ্র করে কোরবানির পশু প্রস্তুত করতে ব্যস্ত সাতক্ষীরার খামারিরা। এ বছর সাতক্ষীরাতে কোরবানিযোগ্য এক লাখ ৫৭৭ টি পশু প্রস্তুত করা হয়েছে। এই পশুগুলো মানুষের বাসাবাড়ি ছাড়াও খামারে লালন-পালন করা হচ্ছে। যা কোরবানিতে বিক্রির জন্য লালন-পালন করা হয়েছে।
তবে পশু খাদ্যের মূল্য বেশি হওয়ার প্রভাব পড়তে পারে কোরবানির হাটে।
জানা গেছে, কোরবানিকে কেন্দ্র্র করে পশুর মালিক, ব্যবসায়ী ও কোরবানি দাতাদের মধ্যে হিসেব-নিকাশ শুরু হয়ে গেছে। সাপ্তাহিক হাট,পাড়া-মহল্লায় গরু ব্যবসায়ীদের আনা গোনাও বেড়েছে। শুধু তাই নয়, একটু কম দামের আশায় আগে থেকে অনেকেই পশুর বায়না করে রাখছেন। তবে ক্রেতা ও বিক্রেতাদের দাবি-পশু খাদ্যের দামের প্রভাব পড়বে গরুর হাটে।
সাতক্ষীরা প্রাণি সম্পদ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, সাতক্ষীরাতে কোরবানির জন্য পশু প্রস্তুত করেছে ১ লক্ষ ২৯ হাজার ৭০৮টি। তবে জেলার চাহিদা রয়েছে ১ লাখ ৫৭৭ টি। এর মধ্যে গরু রয়েছে ৪৫ হাজার ২৬৫ টি, মহিষ রয়েছে ৭৩৭ টি ও ছাগল রয়েছে ৭৬ হাজার ৫৯২ টি, ভেড়া রয়েছে ৬ হাজার ৩১১ টি। তবে সংশ্লিষ্টদের দাবি, প্রতি বছরের ন্যায় এবারও স্থানীয় চাহিদার তুলনায় পশু বেশি রয়েছে।
সাতক্ষীরা তালতলা গ্রামের খামারি আব্দুল কাদের বলেন,আমার খামারে বর্তমান কোরবানিযোগ্য পশু আছে প্রায় ৩০টি। খাদ্য খাবারের যে দাম সেক্ষেত্রে লাভ করা খুব টাফ ব্যাপার তারপরও আমরা চাষী এটা আমাদের পেশা তাই না করলে নয়। আমরা বাংলাদেশের চাষী কি ভাবে চাষ করলে ফসল ফলাতে পারি সেটা বুঝি তবে ব্যয়বহুল খরচ সার মাটি খাদ্য খাবার এই খরচ করার পরে দেখা যাচ্ছে সরকার বাহাদুর বাইরে থেকে এগুলো আমদানি করে আমাদের বাজারটা নষ্ট করে দেয় অনেক সময়। এই জন্য আমরা ফসল তৈরি করতে পারি না।
খামারি আসাদুজ্জামান বলেন,আমি ১৯৯৬ সাল থেকে গরু পালছি। এ বছর ৫০ থেকে ৬০টি কোরবানির জন্য গরু রেডি করা আছে তবে গত বছরের তুলনায় এ বছর গরুর খাবারের দাম যে ভাবে বৃদ্ধি হয়েছে সে ক্ষেত্রে গরুর দাম বেশি হওয়াটা স্বাভাবিক। গত বছরের তুলনায় একটু দাম বেশি না হলে খামারিরা বাঁচবে না। কম বেশি পশুর হাটে কেনাকাটা শুরু হয়েছে। শহরে যারা আছে বেশির ভাগ মুখোমুখি এসে কেনাকাটা করে আমরাও এখন থেকে বিক্রি শুরু করেছি। তবে অনেকের জায়গা না থাকায় কিনে খামারে রেখে দেয় আমরাও তাদরে এ সুযোগ সুবিধা গুলো দেয়।
খামারি নাজমুল হাসান বলেন,এবারও কোরবানির পশুর দাম চড়া হবে। কারণ উৎপাদন খরচ বেশি হয়েছে। কোরবানির ঈদের অন্তত ১৫ দিন আগে থেকে বিক্রির চেষ্টা করব। যদি না হয় এক সপ্তাহ আগে হাটে তুলব। আশা করছি,এবার ঈদে ভালো দাম পাব।
এ বিষয়ে সাতক্ষীরা আবাদের হাটের ইজারাদার হাবিবুর রহমান হবি বলেন,সপ্তাহে শনিবার ও মঙ্গলবার আবাদের হাট বসে। আজ হাটের দিন ছিলো মোটামুটি কোরবানির পশু আসা শুরু হয়েছে। তবে আগামী মঙ্গলবার হাট আরো বড় হবে। হাটে ক্রেতা-বিক্রেতাদের উপস্থিতি বেড়েছে। ঈদের ১০ থেকে ১৫ আগে জমে উঠবে।
এ বিষয়ে সাতক্ষীরা জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. এসএম মাহবুবুর রহমান জানান, সাতক্ষীরাতে বিগত বছরের তুলনায় এবার প্রায় ২৯ হাজার পশু উদ্বৃত্ত থাকবে। দানাদার জাতীয় খাদ্যের দাম বৃদ্ধি হাওয়ায় সাতক্ষীরার খামারিরা ঘাসের উপর নির্ভরশীল হয়েছে। ঘাস পাঁচ থেকে সাত টাকা কেজি এবং দানাদার জাতীয় ৫৫ থেকে ৭০ টাকা পর্যন্ত। যারা প্রকৃত খামারি তারা ঘাসের উপর মোটামুটি ৭০ ভাগ কৃষক নির্ভরশীল হয়ে গেছে। ফলে গত বারে যেমন বাজার স্বাভাবিক ছিল অনুরূপ ভাবে এবারও স্বাভাবিক থাকবে।